Modhur

ইসবগুল কী?
ইসবগুলের ভুসি বা Psyllium Husk হলো একটি প্রাকৃতিক আঁশযুক্ত উপাদান, যা Plantago ovata নামের উদ্ভিদের বীজের খোসা থেকে তৈরি হয়। এই ভুসি পানির সংস্পর্শে এসে জেলির মতো আকার ধারণ করে এবং শরীরের ভেতরে নানা ভাবে উপকার করে।
ইসবগুলের ভুসির প্রধান উপকারিতা
১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
ইসবগুলের ভুসি শরীরে প্রবেশ করে পানি শোষণ করে মল নরম করে দেয়। এতে পেট পরিষ্কার হয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
নিয়মিত ব্যবহার পেটের গ্যাস, অম্বল ও ভারাভাবও কমায়।
২. হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
এটি হজমতন্ত্রে প্রাকৃতিকভাবে কাজ করে এবং খাদ্য সহজে হজম হতে সাহায্য করে।
যাদের বদহজম বা অম্লতা সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি খুব উপকারী।
৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
ইসবগুল রক্তে শর্করার শোষণ ধীর করে, ফলে রক্তে চিনি হঠাৎ বৃদ্ধি পায় না।
এটি টাইপ–২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
৪. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
ইসবগুলের ভুসি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়।
ফলে এটি রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাসে ভূমিকা রাখে।
৫. ওজন কমাতে সাহায্য করে
এটি খেলে পেট ভর্তি অনুভূতি হয়, ফলে ক্ষুধা কম লাগে।
যারা ওজন কমাতে চান, তারা খাবারের আগে ১ চা চামচ ইসবগুল খেতে পারেন। এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখে।
৬. ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানায় উপকার দেয়
ইসবগুল অতিরিক্ত পানি শোষণ করে পায়খানা ঘন করে এবং পেটের সমস্যা দূর করে।
একইসাথে এটি অন্ত্র পরিষ্কার রাখে।

ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
রাতে ঘুমানোর আগে ১–২ চা চামচ ইসবগুলের ভুসি ১ গ্লাস কুসুম গরম পানি বা দুধে মিশিয়ে খান।
ওজন নিয়ন্ত্রণ বা ডায়াবেটিসে ব্যবহার করতে চাইলে খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এটি খাওয়া ভালো।
সর্বদা পর্যাপ্ত পানি পান করুন, না হলে গলায় বা পেটে আটকে যেতে পারে।
সতর্কতা ও পরামর্শ
ইসবগুল খাওয়ার সময় পানির পরিমাণ কম হলে হজমে সমস্যা হতে পারে।
অতিরিক্ত খেলে পেট ফেঁপে যাওয়া বা গ্যাস হতে পারে।
গর্ভবতী নারী বা ওষুধ সেবনকারী ব্যক্তিদের খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ইসবগুলের ভুসি একটি প্রাকৃতিক ও নিরাপদ আঁশজাত উপাদান যা হজম, রক্তে চিনি, কোলেস্টেরল এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে এটি যোগ করলে শরীর থাকে হালকা, সুস্থ ও প্রাণবন্ত।

লেখক : ফরিদা ইয়াসমিন পপি